‘শোয়েব আখতারের প্রথম বলটি আমি দেখতেই পাইনি’

২০০৬ সালে ফয়সালাবাদে পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথের স্মৃতি এখনও ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে সতেজ-টাটকা। কারণ সেই টেস্টেই ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি করেন ভারতীয় উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান মহেন্দ্র সিং ধোনি। অধিকন্তু তার তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শের নেপথ্যে ছিলেন সতীর্থ ফাস্ট বোলার ইরফান পাঠান।

ওই ম্যাচে পিচ ছিল ব্যাটিং স্বর্গ। সেই উইকেটে পাকিস্তানের পাহাড় সমান ৫৮৮ রান তাড়া করতে নামে ভারত। দারুণ ষষ্ঠ উইকেট পার্টনারশিপে ৬০৩ রান তোলে তারা। ধোনি ও পাঠানের ২১০ রানের জুটিতে ভেঙে পড়ে পাক বোলিং আক্রমণ।

ধোনি ১৪৮ ও পাঠান ৯০ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন। তবে এর মূলে রয়েছে স্লেজিং ইতিহাস। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া ইনস্টাগ্রামে এক লাইভ চ্যাটে এমনটিই জানিয়েছেন সাবেক ভারতীয় পেসার পাঠান।

তিনি বলেন, আমি যখন ব্যাট করতে যাই, তখন শোয়েব আখতার বল করছিল। সে প্রতি ঘণ্টায় গতি তুলছিল প্রায় ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার। নন-স্ট্রাইকে ছিল ধোনি। পিচের অবস্থা জানাতে সে বলে, তুমি শুধু ব্যাটিং করে যাও।

তবে ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’কে সামলানো কঠিন ছিল। সেটি কতটা তা বর্ণনা করেন পাঠান। তিনি বলেন, আমি শোয়েবের প্রথম বল দেখতেই পাইনি। আমার খেলা তার ফার্স্ট বলটা বাউন্সার ছিল। মাথার ওপর দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। এ অবস্থায় আমি শুধু ধোনির সঙ্গে জোট বাঁধতে চেয়েছিলাম। কিন্তু একের পর এক স্পেলে পরীক্ষা নিচ্ছিল শোয়েব।

তাই পাক বোলারের বিরুদ্ধে অন্য পথে হাঁটেন পাঠান। নিজেও ফাস্ট বোলার। ফলে অপর স্পিডস্টারের মনস্তত্বটাও ভালোই বোঝেন। অন্য ফন্দি আঁটেন তিনি। বেছে নেন ক্রিকেটের চিরচারিত প্রথা স্লেজিং।

ইরফান বলেন, এর পর শোয়েবকে স্লেজিং করি আমি। ধোনিকে বলি– আমি স্লেজিং করছি, তুমি শুধু তার দিকে তাকিয়ে হাসবে। সে আমাকে সমর্থন দেয়। এর পর ওর বল আর পিচে ঠিকঠাক পজিশনে পড়েনি।

সেই পরিস্থিতির কথা স্মরণ করে পাঠান বলেন, খুব রেগে গিয়েছিল শোয়েব। সে আমাকে বলে– তুমি খুব বেশি কথা বল। অবশেষে সেই বিশাল রানের টেস্ট ড্র করি আমরা। সেঞ্চুরি হাঁকায় মাহি।

প্রসঙ্গত চলতি বছর সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন ইরফান। নিজের বোলিং ক্যারিয়ারে ২৯ টেস্ট, ১২০ ওয়ানডে ও ২৪ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেন তিনি। সব মিলিয়ে তার ঝুলিতে রয়েছে ৩০১ উইকেট। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী টিম ইন্ডিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন এ বাঁহাতি সুইং মাস্টার।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.