মৃত্যুঝুঁকি উপেক্ষা করে করোনা যুদ্ধে প্রভাষক সুমন

মনিরুজ্জামানঃ
বৈশ্বিক এক মহা বিপর্যয়ের নাম করোনা ভাইরাস।পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী রাষ্ট্রগুলো ও আজ এর তান্ডবে লন্ডভন্ড।এমনি এক মহাযুদ্বের সামনের সারির সমরযোদ্বা হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন তাহেরুল ইসলাম সুমন।
পেশায় শিক্ষক। তিনি ইনস্টিটিটিউট অব হেলথ এ্যান্ড টেকনোলজি বরিশাল এর মাইক্রো বায়োলজির প্রভাষক।শিক্ষার্থীদের কাছে সুমন স্যার হিসেবে সমধিক পরিচিত। ২৯ এপ্রিল যিনি দায়িত্ব নিয়েছেন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ, হাসপাতালের করোনা পিসিআর ল্যাবে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হিসেবে।

যেখান থেকে প্রায় শতভাগ আক্রান্তের সম্ভাবনা রয়েছে।
যদিও তাহেরুল ইসলাম সুমন দীর্ঘদিন ধরে অ্যাজমা ও শ্বাস কষ্ট রোগে আক্রান্ত। তবুও দেশের এ ক্রান্তিলগ্নে পিসিআর ল্যাবে যোগদান করায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ইনস্টিটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
এ কারনে আক্রান্তের ঝুঁকিটা আরও বেশী।
সব কিছু বুঝে ও দেশের এ মহাদূর্যোগে নিজেকে সরিয়ে নেয়নি দায়িত্ব থেকে। বিবেক আর মানবিক মূল্যবোধের তাগিদে এ সমর যুদ্ধের সামনের সারির তিনি একজন সারথি।
প্রায়ই আমরা পত্র- পত্রিকা কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডাক্তার কিংবা সংশ্লিষ্ট অনেকের দায়িত্ব পালনে নেতিবাচক খবর শুনছি।ভয়ে চেম্বার করছেন না ডাক্তারগন।এমন বাস্তবতা বিদ্যমান।এই রকম একটি দূর্যোগময় পরিস্থিতিতে নিজের জীবন, প্রিয় সন্তান কিংবা প্রিয়তমা স্ত্রী ভবিষ্যৎ চিন্তা না করেই কঠিন এ দায়িত্ব পালনে হাসিমুখে এগিয়ে আসাটা উদার মন ও মননশীলতার পরিচয়। দেশপ্রেম কিংবা সমাজের প্রতি কেবলমাত্র কমিটেড হলেই তা সম্ভব। যদিও ভাষা আন্দোলন কিংবা মহান মুক্তিযুদ্ধে আমরা এ ত্যাগের ঘটনা দেখছি।বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় এটা কল্পনাতীত নয় কী?
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বিল বিলাশ এলাকায় জন্ম নেওয়া এ কৃতিমান ২ সন্তানের জনক সুমন স্যার।ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীর কাছে যার রয়েছে বিশাল জনপ্রিয়তা। করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ। শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রমের কথা চিন্তা করে যিনি চালু করেন অনলাইন ক্লাস।অভিভাবকদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে নিচ্ছেন শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদ থেকে বিএসসি ইন প্যাথলজি কোর্স সম্পূর্ণ করা এ শিক্ষক নিজ এলাকা বাউফল গোলাবাড়ি মোড়ে গড়ে তুলেন ডিজিটাল ফিজিওথেরাপি সেন্টার। যেখানে বিনামূল্যে দুঃস্থ ও দরিদ্রের সেবা দিয়ে আসছেন।প্রতিষ্ঠা করেছেন ব্লাড ডোনেশন ক্লাব।যার মাধ্যমে রক্তদান করে মানব সেবা করে যাচ্ছেন।
তাহেরুল ইসলাম সুমন জানান,দেশের প্রয়োজনে বিবেকের তাড়নায় আমার এ দায়িত্ব গ্রহণ। যদিও আমি নিজেই অসুস্থ। তিনি বলেন এখানকার ল্যাবে প্রতিদিন ৯৪ থেকে ১৪০ টি করোনা টেস্ট করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.