করোনা ভাইরাসের আগমনের সাথে সাথে আমরা বেশ কিছু শব্দ নিয়মিত শুনে বা দেখে আসছি। প্রথম পর্বের ধারাবাহিকতায় এবারও তেমন কিছু বিষয়

পর্ব-২:
ভাইরাস:
১) ভাইরাস অতি ক্ষুদ্র একটি স্বত্ত্বা। এটি সাধারণত নির্দিষ্ট পোষকের ভিতর প্রবেশ করলেই কেবল তার বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করতে পারে। এক একটি ভাইরাসের জন্য এক এক ধরণের পোষক থাকে। পোষকের বাইরে এটি জড় পদার্থের মত আচরণ করে, কিন্তু পোষকের ভিতরে এটা খুব সক্রিয় জীব স্বত্ত্বার মত আচরণ করে।
২) ভাইরাস পোষক দেহে প্রবেশ করে খুব দ্রুত পোষক কোষের উপাদানগুলোকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে থাকে।
৩) প্রকৃতিতে প্রচুর পরিমাণে ভাইরাস বিদ্যমান, কিন্তু সব ভাইরাস মানুষ বা প্রাণিদের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৪) ভাইরাস মানুষ বা বিভিন্ন প্রাণি ছাড়াও উদ্ভিদ এবং ব্যাক্টেরিয়ার কোষকে তাদের পোষক হিসাবে ব্যবহার করে থাকে।
৫) করোনা ভাইরাসগুলো মানুষের দেহে কোষের মধ্যে প্রবেশ করে দ্রুত তার সংখ্যা বৃদ্ধি করে থাকে। এক্ষেত্রে বৃদ্ধিগুলো ২, ৪, ৮, ১৬, ৩২, ৬৪, ১২৮, ২৫৬…… এভাবে ক্রমাগত চলতে থাকে। তাই খুব দ্রুত ভাইরাস তার বংশবৃদ্ধি করতে সক্ষম হয় এবং নতুন নতুন কোষকে আক্রমণ করতে থাকে।
প্রাণিবাহিত রোগ (zoonotic disease):
১) সাধারণত মেরুদণ্ডী প্রাণি থেকে যে সমস্ত রোগ মানুষে সংক্রমণ ঘটায় তাদেরকে প্রাণিবাহিত রোগ বলে।
২) এই ধরণের সংক্রমণ ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া বা বিভিন্ন পরজীবীর দ্বারা ঘটতে পারে।
৩) এইসব ক্ষেত্রে মেরুদণ্ডী প্রাণিটি রোগ দ্বারা আক্রান্তও হতে পারে অথবা রোগের বাহকও হতে পারে।
৪) বাহক প্রাণিটির দেহ থেকে জীবাণুগুলো বাতাস, সংস্পর্শ, প্রাণিটির কামড়ের মাধ্যমে বা প্রাণির লালার মাধ্যমে মানুষের দেহে প্রবেশ করতে পারে।
৫) প্রাণিবাহিত রোগের উদাহরণ হিসাবে বার্ড ফ্লু বা সুয়াইন ফ্লুর কথা বলা যেতে পারে। বার্ড ফ্লু বিভিন্ন পাখির মাধ্যমে সংক্রমিত হয়ে মানুষের দেহে রোগ তৈরি করে, আর সুয়াইন ফ্লু শুকরের মাধ্যমে মানুষের দেহে রোগ তৈরি করে।
৬) কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরাসরি প্রাণিটির মাধ্যমে মানুষের দেহে না এসে অন্য কোনো বস্তুও সেটার সাময়িক বাহক হতে পারে।
৭) কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষও অন্য প্রাণির রোগের কারণ হতে পারে, তখন এটাকে Anthroponosis বলে।
এ. এফ. এম. নাজমুস সালেহীন
বিএসসি (অনার্স), এম এস
মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়