জাতির পিতার জন্মক্ষণে শুরু আনুষ্ঠানিকতা

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের রাত আটটায় টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। সেই ক্ষণেই আজ মঙ্গলবার শুরু হবে মুজিবশতবর্ষ বা মুজিববর্ষের আনুষ্ঠানিকতা। আতশবাজির মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে পিক্সেল ম্যাপিংয়ের মধ্য দিয়ে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
তিনি বলেন, রাত আটটায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আতশবাজির মধ্য দিয়ে মুজিববর্ষের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এর পর দুই ঘণ্টাব্যাপী ধারণকৃত একটি অনুষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সব বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত হবে।
রাত দশটায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় পিক্সেল ম্যাপিং প্রদর্শনের মাধ্যমে মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষ হবে। ধারণকৃত অনুষ্ঠানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ১০ জানুয়ারি ক্ষণ গণনার মধ্য দিয়ে মুজিববর্ষের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
আমরা দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে বিশ্বের সব প্রান্তে মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে সব অনুষ্ঠান শেষমুহূর্তে স্থগিত করতে হয়। সেজন্যই আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ধারণকৃত অনুষ্ঠান প্রচার করব।
অনুষ্ঠানের বিস্তারিত তুলে ধরে তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আতশবাজি সরাসরি প্রচারিত হওয়ার পর আমরা ধারণকৃত অনুষ্ঠানে যাব। যার শুরু হবে শিশুকণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। এর পর প্রচারিত হবে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাণী।
এরপরের আয়োজনের মধ্যে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর পরিবেশিত হবে মুজিববর্ষের থিম সং, যাতে দেশের প্রথিতযশা শিল্পীদের সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানা। এ অনুষ্ঠানে পিতাকে নিয়ে শেখ রেহানার লেখা কবিতা আবৃত্তি করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, অনুষ্ঠানে শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় ৪০ মিনিটের একটি সাংস্কৃতিক পরিবেশনা রয়েছে। দেশের শিল্পীদের পরিবেশনায় থাকছে যন্ত্রসঙ্গীত। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নৃত্য পরিচালক আকরাম খানের পরিচালনায় থাকছে থিয়েটারেটিক্যাল পারফরমেন্স। সবশেষে থাকবে পিক্সেল ম্যাপিং। আতশবাজির মতো এটিও সরাসরি অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে বিশ্ব নেতা ও সংস্থার প্রধানদের বাণী প্রচারিত হবে। যাদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা ভল্ডারি, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ওআইসির মহাসচিব ইউসেফ আল-ওথাইমিন প্রমুখ।
কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট, স্মারক নোট ও স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে, যা আজ বিকাল পাঁচটায় গণভবনে
উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া অন্য যেসব আয়োজন ছিল সেগুলো করোনাভাইরাসের গতিপ্রকৃতির ওপর নির্ভর করে আয়োজন করা হবে। তার আগ পর্যন্ত অধিক জনসমাগমের কোনো আয়োজন থাকছে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা প্রমুখ।