ভোলায় বড় পরিসরে গ্যাস অনুসন্ধানে যাচ্ছে সরকার

বিশেষ প্রতিনিধি ॥
দেশের স্থল ও সমুদ্রভাগে বড় পরিসরে গ্যাস অনুসন্ধানে যাচ্ছে সরকার। এ ক্ষেত্রে সরকার রুশ কোম্পানি গ্যাজপ্রমকে সহযাত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছে। সরকার বহুজাতিক কোম্পানিটির সঙ্গে শিগগিরই চুক্তি করবে। জ্বালানি আমদানি বৃদ্ধির বিপরীতে অনুসন্ধান কার্যক্রম জোরদার করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা। সে ধারাবাহিকতায় রুশ কোম্পানিটির সঙ্গে সরকারের অংশীদারিত্ব জ্বালানি অনুসন্ধানে গতি আনবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে তারা এ ও বলছেন, রাষ্ট্রীয় গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি বাপেক্সকে দিয়ে এ অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করা যেত। এতে সময় কিছুটা বেশি লাগলেও খরচ কম হতো। আর বড় অনুসন্ধানে জড়িত না হলে গ্যাস অনুসন্ধানে বাপেকসের সক্ষমতাও বাড়বে না।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্র জানায়, দেশের সমুদ্র ও স্থলে গ্যাস-খনিজ অনুসন্ধানে গ্যাজপ্রমের সঙ্গে পৃথক সাতটি চুক্তি স্বাক্ষরে সরকার নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২২ নম্বর ব্লকে পার্বত্য চট্টগ্রামে, সমুদ্রের বিভিন্ন ব্লকে দ্বিমাত্রিক ভূকম্প জরিপ, শ্রীকাইল, সুনেত্র, মোবারকপুর, শৈলকুপা ও ভোলা গ্যাসক্ষেত্রে গভীর খনন কার্যক্রম, ভোলা গ্যাসক্ষেত্রের মজুদ মূল্যায়ন এবং ছাতক গ্যাসক্ষেত্রে খনন কার্যক্রম পরিচালনা।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পেয়েছি। এখন সমঝোতা স্মারকের খসড়া তৈরি হয়েছে। আলোচনার ভিত্তিতে এটি শিগগিরই চূড়ান্ত হবে। যত দ্রুত সম্ভব সমঝোতা ও চুক্তি করতে চায় দুই পক্ষই।


জানা যায়, ৫টি গ্যাসক্ষেত্রে গভীর কূপ খননে গ্যাজপ্রম ১৬ কোটি ডলার দাবি করেছে। শাহবাজপুর পূর্বে খননের জন্য ১৩১ কোটি টাকা এবং ভোলা উত্তরে কূপ খননে চায় প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। বাপেকসের এক কর্মকর্তা জানান, এ কূপগুলো খননে তারা এর চেয়ে কম অর্থ প্রস্তাব করেছিলেন।
এছাড়া সমুদ্রের ২৬টি ব্লকের মধ্যে ২২টিতে জরিপ পরিচালনায় প্রায় সাড়ে ৩ কোটি মার্কিন ডলার প্রস্তাব করেছে গ্যাজপ্রম। এ অর্থে তারা প্রায় ৩৫ হাজার লাইন কিলোমিটার এলাকায় জরিপ পরিচালনা করবে। প্রায় এক দশক ধরে সরকার সমুদ্রভাগে দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক জরিপ পরিচালনার পরিকল্পনা করে আসছিল।
এ প্রসঙ্গে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন বলেন, সরকার গ্যাস অনুসন্ধানে জোর দিচ্ছে। অনুসন্ধান কার্যক্রম জোরদারের অংশ হিসেবে গ্যাজপ্রমের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
তবে জ্বালানি খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেকটা যাচাই-বাছাইহীনভাবে গ্যাজপ্রমকে গ্যাস অনুসন্ধানের এত বড় কাজ দেওয়া হচ্ছে। বাপেক্সকে দিয়ে এটি করানো যেত। কিংবা বিদেশি কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে এ কাজের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া যেত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.