নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা

ভোলা বার্তা.সুলতান নাহিদ খান ডেস্ক রিপোর্ট।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদের ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ২৩ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৯ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের তারিখ ২২ নভেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ নভেম্বর।

প্রদত্ত ভাষণে সিইসি আরও বলেছেন, তিনি প্রত্যাশা করেন, নির্বাচনে প্রার্থী ও তার সমর্থকরা নির্বাচনী আইন ও আচরণবিধি মেনে চলবেন।

প্রত্যেক ভোটার অবাধে ও স্বাধীন বিবেকে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করবেন বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। সিইসি দেশের সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানিয়ে অনুরোধ করেছেন, তাদের মধ্যে কোনো বিষয়ে মতানৈক্য বা মতবিরোধ থাকলে তা যেন রাজনৈতিকভাবে মীমাংসার উদ্যোগ নেয়া হয়। দলগুলোকে একে অন্যের প্রতি সহনশীল, সম্মানজনক ও রাজনীতিসুলভ আচরণ করারও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার অবসান হল। বস্তুত আজ থেকেই নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু হবে। ১ মাস ১৪ দিন পর যে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তা শেষ পর্যন্ত কেমন পরিবেশে এবং কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে অবশ্য দুশ্চিন্তা রয়েছে অনেকের মধ্যে। বিশেষত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সরকারের দুই দফা আনুষ্ঠানিক সংলাপে ঐক্যফ্রন্ট সন্তুষ্ট হতে না পারায় এই দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে।

প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে আদৌ অংশগ্রহণ করবে কিনা তা নিয়েও। এটা ঠিক, অন্যান্য দল অংশ নিলেও ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে নির্বাচনটি যথার্থ অংশগ্রহণমূলক হবে না। শুধু তাই নয়, সে ক্ষেত্রে দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার অবসান ঘটবে না। দেশের মানুষ শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চায়। মানুষের সেই আকাক্সক্ষা বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেবে এটাই প্রত্যাশা।

সরকার পক্ষেরও উচিত হবে, ঐক্যফ্রন্টসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপের ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে এমনভাবে সহায়তা প্রদান করা, যাতে নির্বাচনে সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। দ্বিতীয় কথা, আনুষ্ঠানিক সংলাপ শেষ হয়েছে বটে, তবে এর মানে এই নয় যে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের আর কোনো আলোচনাই হবে না। এখন পর্যন্ত যেসব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি, সেগুলোর ব্যাপারে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হতেই পারে। দুই পক্ষের মধ্যে যে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সংলাপ হয়েছে, সেই সৌহার্দ্য যদি নির্বাচন পর্যন্ত বজায় থাকে, তাহলে তা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সরকার ও বিরোধী পক্ষ যদি পরস্পরের প্রতি ছাড় দেয়ার মানসিকতা দেখাতে পারে, তাহলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে বড় সুখবর তৈরি হবে অবশ্যই।বহুল কাক্সিক্ষত নির্বাচন এসে গেল। রাজনৈতিক দলগুলোকে সবচেয়ে বড় যে বিষয়টিতে মনোযোগ দিতে হবে, তা হল প্রার্থী বাছাই। সব পক্ষই যদি সৎ ও যোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারে, সেটাও আমাদের জন্য কম বড় অর্জন হবে না। সবশেষ কথা, সিইসি যে আহ্বান রেখেছেন- নির্বাচনী আচরণ ও আইন মেনে চলা- সেই আহ্বানেও সাড়া দিতে হবে সবাইকে। আমাদের প্রত্যশা থাকবে, সামনের দিনগুলোয় যেন এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, যা দেশ ও সমাজকে অস্থিতিশীল ও সংঘাতময় করে তুলতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.